2
পক্ষপাতিত্ব সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা
1 হে আমার ভাইবোনেরা, আমাদের মহিমাময় প্রভু যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসীরূপে তোমরা পক্ষপাতিত্ব দেখিয়ো না। 2 মনে করো, কোনো ব্যক্তি সোনার আংটি ও সুন্দর পোশাক পরে তোমাদের মণ্ডলীর সভায় এল এবং মলিন পোশাক পরে একজন দীনহীন ব্যক্তিও সেখানে এল। 3 তোমরা যদি সুন্দর পোশাক পরা ব্যক্তির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেখাও ও তাকে বলো, “এখানে আপনার জন্য একটি ভালো আসন আছে,” কিন্তু সেই দীনহীন ব্যক্তিকে বলো, “তুমি ওখানে দাঁড়াও” বা “আমার পায়ের কাছে মেঝের উপরে বসো,” 4 তাহলে তোমরা কি নিজেদের মধ্যে বৈষম্যমূলক আচরণ করছ না ও মন্দ ভাবনা নিয়ে বিচারকের স্থান গ্রহণ করছ না?
5 আমার প্রিয় ভাইবোনেরা, তোমরা শোনো: জগতের দৃষ্টিতে যারা দরিদ্র, ঈশ্বর কি তাদের মনোনীত করেননি, যেন তারা বিশ্বাসে ধনী হয় এবং যারা তাঁকে ভালোবাসে, তাদের কাছে প্রতিশ্রুত রাজ্যের অধিকারী হয়? 6 কিন্তু তোমরা সেই দরিদ্রকে অপমান করেছ। ধনী ব্যক্তিরাই কি তোমাদের শোষণ করে না? তারাই কি তোমাদের বিচারালয়ে টেনে নিয়ে যায় না? 7 তারাই কি সেই পরমশ্রেষ্ঠ নামের নিন্দা করে না, যাঁর নিজস্ব অধিকাররূপে তোমরা পরিচিত হয়েছ?
8 শাস্ত্রের এই রাজকীয় বিধান, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতোই ভালোবেসো,”*লেবীয় পুস্তক 19:18 যদি তোমরা প্রকৃতই মেনে চলো, তাহলে তোমরা ঠিকই করছ। 9 কিন্তু তোমরা যদি পক্ষপাতিত্ব করো, তবে পাপ করেছ এবং বিধানের দ্বারাই তোমরা বিধানভঙ্গকারীরূপে দোষী সাব্যস্ত হবে। 10 কারণ সমস্ত বিধান পালন করে কেউ যদি শুধুমাত্র একটি আজ্ঞা পালনে ব্যর্থ হয়, সে তার সমস্তই লঙ্ঘনের দায়ে দোষী হবে। 11 কারণ যিনি বলেছেন, “ব্যভিচার কোরো না,”†যাত্রা পুস্তক 20:14; দ্বিতীয় বিবরণ 5:18 তিনিই আবার বলেছেন, “তোমরা নরহত্যা কোরো না।”‡যাত্রা পুস্তক 20:13; দ্বিতীয় বিবরণ 5:17 তোমরা হয়তো ব্যভিচার করোনি, কিন্তু যদি নরহত্যা করে থাকো, তাহলে তোমরা বিধানভঙ্গকারী হয়েছ।
12 যে বিধানের দ্বারা তোমরা স্বাধীনতা লাভ করেছ তারই দ্বারা তোমাদের বিচার হতে চলেছে, তোমরা সেইমতো কথা বলো ও কাজ করো। 13 কারণ যে দয়া দেখায়নি, নির্দয়ভাবে তার বিচার করা হবে। দয়াই বিচারের উপরে জয়লাভ করে।
কর্মহীন বিশ্বাসের অসারতা
14 কোনো মানুষ যদি দাবি করে তার বিশ্বাস আছে, কিন্তু সেইমতো কোনো কর্ম না থাকে, তাহলে আমার ভাইবোনেরা, এতে কী লাভ হবে? এ ধরনের বিশ্বাস কি তাকে পরিত্রাণ দিতে পারে? 15 মনে করো, কোনো ভাই বা বোনের পোশাক ও দৈনন্দিন খাবারের সংস্থান নেই। 16 তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তাকে বলে, “শান্তিতে যাও, তুমি উষ্ণ ও তৃপ্ত থাকো,” কিন্তু তার শারীরিক প্রয়োজন সম্পর্কে সে কিছুই না করে, তাহলে, তাতে কী লাভ হবে? 17 একইভাবে, বিশ্বাসের সঙ্গে যদি কর্ম যুক্ত না হয়, তাহলে সেই বিশ্বাস মৃত।
18 কিন্তু কেউ হয়তো বলবে, “তোমার বিশ্বাস আছে, কিন্তু আমার কর্ম আছে।”
আমাকে তোমার কর্মহীন বিশ্বাসের প্রমাণ দেখাও, আমি তোমাকে আমার কর্মের মাধ্যমে বিশ্বাস দেখাব। 19 তুমি তো বিশ্বাস করো যে, ঈশ্বর এক। ভালো, এমনকি, ভূতেরাও তা বিশ্বাস করে ও ভয়ে কাঁপে।
20 ওহে নির্বোধ মানুষ, কর্মহীন বিশ্বাস যে নিরর্থক,§কোনো কোনো প্রাচীন পাণ্ডুলিপিতে, মৃত। তুমি কি তার প্রমাণ চাও? 21 আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, তাঁর পুত্র ইস্হাককে বেদির উপরে উৎসর্গ করেছিলেন এবং তাঁর কর্মের দ্বারাই তাঁকে কি ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক দেখানো হয়নি? 22 তাহলে, তোমরা দেখতে পাচ্ছ যে, তাঁর বিশ্বাস ও তাঁর কর্ম একযোগে সক্রিয় ছিল এবং কর্মের দ্বারাই তাঁর বিশ্বাস পূর্ণতা লাভ করেছিল। 23 আবার শাস্ত্রেরও এই বচন পূর্ণ হল, যা বলে, “অব্রাহাম ঈশ্বরকে বিশ্বাস করলেন এবং তা তাঁর পক্ষে ধার্মিকতা বলে গণ্য হল।”*আদি পুস্তক 15:6 আর তিনি ঈশ্বরের বন্ধু†2 বংশাবলি 20:7; যিশাইয় 41:8—এই নামে আখ্যাত হলেন। 24 তোমরা দেখতে পাচ্ছ, কোনো মানুষ কেবলমাত্র বিশ্বাসে নয়, কিন্তু তার কর্মের দ্বারাই নির্দোষ গণ্য হয়।
25 একইভাবে, বেশ্যা রাহবও তাঁর কর্মের জন্য কি ধার্মিক বলে প্রদর্শিত হননি? তিনি সেই গুপ্তচরদের থাকার আশ্রয় দিয়ে, পরে অন্য পথ দিয়ে তাদের বিদায় দিয়েছিলেন। 26 যেমন আত্মাবিহীন শরীর মৃত, তেমনই কর্মবিহীন বিশ্বাসও মৃত।