2
বোখীমে সদাপ্রভুর দূতের আগমন
1 সদাপ্রভুর দূত গিল্গল থেকে বোখীমে উঠে গিয়ে বললেন, “আমি মিশর থেকে তোমাদের বের করে এনেছি এবং যে দেশ দেওয়ার শপথ আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করেছিলাম, সেই দেশে তোমাদের নিয়ে এসেছি। আমি বলেছিলাম, ‘আমি তোমাদের কাছে আমার নিয়মটি কখনোই ভঙ্গ করব না, 2 আর তোমরাও এই দেশের অধিবাসীদের সঙ্গে কোনও নিয়ম স্থির করবে না, কিন্তু তোমরা তাদের যজ্ঞবেদিগুলি ভেঙে ফেলবে।’ অথচ তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ। তোমরা কেন এরকম করলে? 3 আর আমি এও বলেছি, ‘আমি তোমাদের সামনে থেকে তাদের বিতাড়িত করব না; তারা তোমাদের জন্য জালে পরিণত হবে, এবং তাদের দেবতারা তোমাদের কাছে ফাঁদে পরিণত হবে।’ ”
4 সদাপ্রভুর দূত ইস্রায়েলীদের কাছে এসব কথা বলাতে, তারা তারস্বরে কেঁদে ফেলল, 5 এবং তারা সেই স্থানটির নাম রাখল বোখীম।*বোখীম শব্দের অর্থ ক্রন্দনকারীরা সেখানে তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করল।
অবাধ্যতা ও পরাজয়
6 যিহোশূয় ইস্রায়েলীদের বিদায় করে দেওয়ার পর, তারা প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব অধিকার অনুসারে, দেশ দখল করতে গেল। 7 লোকজন যিহোশূয়ের জীবনকালে ও সেইসব প্রাচীনের জীবনকালে আগাগোড়াই সদাপ্রভুর সেবা করল, যারা যিহোশূয়ের মৃত্যুর পরও জীবিত ছিলেন ও ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভু যেসব মহান কাজ করেছিলেন, সেগুলি দেখেছিলেন।
8 নূনের ছেলে, সদাপ্রভুর দাস যিহোশূয় 110 বছর বয়সে মারা গেলেন। 9 আর তারা তাঁকে গাশ পর্বতের উত্তরে, ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের তিম্নৎ-হেরসে†তিম্নৎ-সেরহ নামেও পরিচিত; যিহোশূয়ের পুস্তক 19:50 ও 24:30 পদও দেখুন, তাঁর নিজস্ব অধিকার-ভূমিতে কবর দিল।
10 সেই প্রজন্মের সমস্ত লোকজন তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার পর, অপর এক প্রজন্ম বেড়ে উঠল, যারা না চিনত সদাপ্রভুকে, না জানত তিনি ইস্রায়েলের জন্য কী কী করেছিলেন। 11 পরে ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ তাই করল এবং বায়াল-দেবতাদের সেবা করল। 12 তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, সেই সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করল, যিনি মিশর থেকে তাদের বের করে এনেছিলেন। তারা তাদের চারপাশে বসবাসকারী লোকদের আরাধ্য বিভিন্ন দেবতাদের অনুগামী হল এবং তাদের আরাধনা করতে লাগল। তারা সদাপ্রভুর ক্রোধ জাগিয়ে তুলল 13 কারণ তারা তাঁকে পরিত্যাগ করল এবং বায়াল-দেবতার ও অষ্টারোৎ দেবীদের সেবা করল। 14 ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে ক্রোধের বশবর্তী হয়ে সদাপ্রভু তাদের সেই আক্রমণকারীদের হাতে সমর্পণ করলেন, যারা তাদের উপরে লুঠতরাজ চালিয়েছিল। তিনি তাদের চারপাশের সেই শত্রুদের হাতে তাদের বিক্রি করে দিলেন, যাদের প্রতিরোধ তারা আর করে উঠতে পারেনি। 15 যখনই ইস্রায়েল যুদ্ধযাত্রা করতে যেত, তাদের পরাজিত করার জন্য সদাপ্রভুর হাত তাদের বিরুদ্ধাচারী হত, ঠিক যেভাবে তিনি তাদের কাছে শপথ করেছিলেন। তাদের উপরে চরম দুর্দশা নেমে এল।
16 তখন সদাপ্রভু সেই বিচারকদের‡অথবা, নেতাদের; 17-19 পদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য উত্থাপিত করলেন, যারা আক্রমণকারীদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করেছিলেন। 17 তবুও তারা তাদের বিচারকদের কথায় কর্ণপাত করত না কিন্তু অন্যান্য দেবতাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বেশ্যাবৃত্তিতে নেমে তাদের আরাধনা করত। তারা দ্রুত তাদের সেই পূর্বপুরুষদের পথ থেকে ফিরে গেল, যারা সদাপ্রভুর আদেশগুলির প্রতি বাধ্য হয়ে চলতেন। 18 সদাপ্রভু যখনই তাদের জন্য কোনও বিচারক উত্থাপিত করতেন, তিনি সেই বিচারকের সহায় হতেন এবং যতদিন সেই বিচারক জীবিত থাকতেন ততদিন সদাপ্রভু তাদের শত্রুদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতেন; যেহেতু তাদের শোষণের কারণে ও নির্যাতনকারীদের অধীনে তাদের জীবনে উৎপন্ন কাতরোক্তির কারণে সদাপ্রভু করুণাবিষ্ট হতেন। 19 কিন্তু সেই বিচারক মারা গেলেই, লোকেরা আবার অন্যান্য দেবতাদের অনুগামী হয়ে, তাদের সেবা ও আরাধনা করার মাধ্যমে তাদের পূর্বপুরুষদের থেকেও বেশি পরিমাণে কলুষিত হয়ে বিপথগামী হয়ে পড়ত। তারা তাদের মন্দ অভ্যাস ও অনমনীয় স্বভাব ত্যাগ করতে চাইত না।
20 অতএব সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপরে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, “যেহেতু এই জাতি সেই নিয়মটি ভঙ্গ করেছে, যা আমি তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য নিরূপিত করেছিলাম এবং যেহেতু আমার কথায় তারা কর্ণপাত করেনি, 21 তাই আমি আর সেইসব জাতির মধ্যে কোনো জাতিকেই তাদের সামনে থেকে বিতাড়িত করব না, যিহোশূয় মারা যাওয়ার সময় যাদের অবশিষ্ট রেখে গিয়েছিল। 22 ইস্রায়েলকে পরীক্ষা করার জন্য ও তাদের পূর্বপুরুষদের মতো তারা সদাপ্রভুর পথে চলে তাঁর আজ্ঞা পালন করছে কি না তা দেখার জন্য আমি এই জাতিকে ব্যবহার করব।” 23 সদাপ্রভু সেইসব জাতিকে সেখানে থাকতে দিলেন; তিনি যিহোশূয়ের হাতে তাদের সমর্পণ করার দ্বারা অবিলম্বে তাদের বিতাড়িত করলেন না।