16
ইলীফসকে ইয়োবের উত্তর
তখন ইয়োব উত্তর দিলেন,
 
“আমি এই সব কথা আগেই শুনেছি|
তোমরা তিন জন আমাকে কষ্টই দিলে, স্বস্তি নয়|
তোমাদের দীর্ঘ ভাষণ আর শেষ হয় না!
কিসে তোমাদের এত বিচলিত করেছে যে তোমরা কথা বলেই চলেছ?
যদি তোমরা আমার সমস্যায় পড়তে,
তোমরা যে কথাগুলি আমায় বললে, আমিও তোমাদের সেই কথাগুলি বলতে পারতাম|
আমিও তোমাদের প্রতি জ্ঞানগর্ভ কথা বলতে পারতাম
এবং তোমাদের প্রতি মাথা নাড়াতে পারতাম|
কিন্তু আমি তোমাদের উৎসাহ দিতাম এবং যে কথাগুলো বলছি, সেগুলো বলে তোমাদের আমি আশা দিতাম|
 
“কথা বললেও আমার যন্ত্রণা চলে যায় না,
নীরব থাকলেও আমার ব্যথা আমাকে ছেড়ে যায় না|
কিন্তু, হে ঈশ্বর, আপনি আমার শক্তি কেড়ে নিয়েছেন|
আপনি আমার সারা পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছেন|
আপনি আমায় শীর্ণ ও দুর্বল করে দিয়েছেন,
এর অর্থ, লোকে মনে করে যে আমি অপরাধী|
 
“ক্রোধে ঈশ্বর আমাকে আক্রমণ করেছেন
এবং আমার দেহকে ছিন্ন-ভিন্ন করেছেন|
ঈশ্বর আমার বিরুদ্ধে তাঁর দাঁত ঘর্ষন করেছেন|
আমার শত্রু ঘৃণাভরে আমার দিকে তাকায়|
10 আমার চার দিকে লোক জন জড়ো হয়েছে|
তারা আমাকে নিয়ে মজা করে এবং আমার গালে চড় মারে|
11 ঈশ্বর আমাকে মন্দ লোকদের হাতে তুলে দিয়েছেন|
তিনি দুষ্ট লোকের হাতে আমাকে তুলে দিয়েছেন|
12 আমার সব কিছুই সুন্দর ছিলো
কিন্তু ঈশ্বর আমায় ধ্বংস করেছেন!
হ্যাঁ, তিনিই আমার ঘাড় ধরে
আমায় খণ্ড-বিখণ্ড করেছেন|
ঈশ্বর আমাকে লক্ষ্যভেদের বস্তুতে পরিণত করেছেন|
13 ঈশ্বরের তীরন্দাজ সৈন্যরা আমার চারদিকে ঘুরছে|
তিনি আমার বৃক্কে তীর ছুঁড়ছেন|
তিনি আমাকে কোন দয়া দেখান না|
তিনি আমার পিত্তকে মাটিতে ফেলে দেন|
14 বার বার ঈশ্বর আমায় আক্রমণ করেন|
যুদ্ধের সৈন্যরা যেমন তেড়ে আসে তেমন করে তিনি আমার দিকে ছুটে আসেন|
 
15 “আমি নিদারুণ ভাবে দুঃখী,
তাই আমি এই দুঃখের বস্ত্র পরেছি|
আমি এই ধূলো ও ছাইয়ের ওপর বসে অনুভব করি
যে আমি পরাজিত|
16 কেঁদে কেঁদে আমার মুখ লাল হয়ে গেছে|
আমার চোখে ঘন অন্ধকার নেমে এসেছে|
17 আমি কারো প্রতিই নৃশংস ছিলাম না|
কিন্তু এই মন্দ ঘটনাগুলি আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে| আমার প্রার্থনা যথাযথ ও পবিত্র|
 
18 “আমার প্রতি যে অন্যায় ঘটেছে, হে পৃথিবী, তুমি তা গোপন করো না|
ন্যায়ের জন্য আমার আর্তিকে স্তব্ধ হতে দিও না|
19 এখনও পর্যন্ত স্বর্গে কেউ আছে যে আমার পক্ষে কথা বলবে|
এখনও পর্যন্ত ওপরে কেউ আছে যে আমার পক্ষে সাক্ষী দেবে|
20 আমার চোখ যখন ঈশ্বরের জন্য অশ্রু বিসর্জন করে,
আমার বন্ধুরা আমার হয়ে কথা বলে|
21 একজন যে ভাবে বন্ধুর জন্য তর্ক করে,
সেইভাবেই সে আমার জন্য ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে|
 
22 “আর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই আমি সেখানে যাবো যেখান থেকে ফেরা যায় না|