20
মরিয়ম মারা গেলেন
ইস্রায়েলের লোকরা প্রথম মাসে, সীন মরুভূমিতে পৌঁছালো| প্রথমে তারা কাদেশে পৌঁছাল, সেখানে মরিয়ম মারা গেলেন এবং তাকে সেখানেই কবর দেওয়া হয়েছিল|
মোশি ভুল করলেন
সেই জায়গায় লোকদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জল ছিল না, সুতরাং মোশি এবং হারোণের কাছে অভিযোগ করার জন্যে লোকরা এক জায়গায় মিলিত হয়েছিল| লোকরা মোশির সঙ্গে তর্ক করে বলল, “এও হলে ভাল হতো যদি আমরা আমাদের ভাইদের মতো প্রভুর সামনে মারা যেতাম| আপনি কেন প্রভুর লোকদের এই মরুভূমিতে নিয়ে এসেছিলেন? আপনার ইচ্ছে কি এটাই যে আমাদের এবং আমাদের সঙ্গে থাকা পশুদের এখানেই মৃত্যু হোক্? আপনি কেন আমাদের মিশর থেকে এই খারাপ জায়গায় নিয়ে এসেছেন? এখানে কোনো শস্য নেই| এখানে কোনো ডুমুর, দ্রাক্ষা অথবা ডালিম ফল নেই এবং পানের জন্য কোনো জলও নেই|”
সুতরাং মোশি এবং হারোণ লোকদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ পথে গেলেন| তাঁরা মাটিতে উপুড় হয়ে পড়লে প্রভুর মহিমা তাঁদের সামনে প্রকাশিত হল|
প্রভু মোশিকে বললেন, “হাঁটার বিশেষ লাঠিটি নিয়ে এসো| হারোণ এবং লোকদের নিয়ে সেই পাহাড়ের সামনে এসো| সবার সামনে ঐ পাহাড়কে বলো, তখন ঐ পাহাড় থেকে জল প্রবাহিত হবে| তুমি সেই জল লোকদের এবং তাদের পশুদের দিতে পারবে|”
লাঠিটি পবিত্র তাঁবুতে প্রভুর সামনে ছিল| প্রভু যেভাবে বলেছিলেন, মোশি সেই ভাবেই লাঠিটি নিয়ে এলেন| 10 মোশি এবং হারোণ পাহাড়ের সামনে সমস্ত লোকদের সমবেত হতে বললেন| তখন মোশি বললেন, “তোমরা সকল সময়েই অভিযোগ করছ| এখন আমার কথা শোন| আমরা কি তোমাদের জন্য এই পাহাড় থেকে জল বার করবো?” 11 এরপর মোশি তাঁর হাত তুললেন এবং পাহাড়ে দুবার আঘাত করলেন| পাহাড় থেকে জল বেরোতে শুরু করল| লোকরা এবং তাদের পশুরা জল পান করল|
12 কিন্তু প্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “ইস্রায়েলের সব লোকর সাক্ষাতে তুমি আমার প্রতি সম্মান দেখাও নি| তুমি ইস্রায়েলের লোকদের দেখাও নি যে জল বার করার ক্ষমতা আমার থেকেই এসেছে| তুমি লোকদের দেখাও নি যে তুমি আমার প্রতি বিশ্বাস রেখেছো| আমি ঐসব লোকদের সেই দেশটি দেব যে দেশটি আমি তাদের দেব বলে শপথ করেছিলাম, কিন্তু তুমি তাদের সেই দেশে নিয়ে যেতে নেতৃত্ব দেবে না|”
13 এই জায়গাটিকে বলা হতো মরীবার জল| এটিই সেই জায়গা যেখানে ইস্রায়েলীয়রা প্রভুর সঙ্গে বিবাদ করেছিল এবং এটিই সেই জায়গা যেখানে প্রভু তাদের দেখিয়েছিলেন যে তিনি পবিত্র|
ইদোম ইস্রায়েলকে যেতে বাধা দিল
14 কাদেশে থাকাকালীন মোশি ইদোমীয় রাজার কাছে বার্তাসহ কয়েকজন লোককে পাঠালেন| বার্তায় বলা ছিল:
 
“আপনার ভাইরা অর্থাৎ‌ ইস্রায়েলের লোকেরা, আপনাকে বলছে: আমাদের যে সব সমস্যা আছে সে সম্পর্কে আপনি সবই জানেন| 15 বহু বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা মিশরে গিয়েছিলেন এবং আমরা সেখানে বহু বছর বাস করেছিলাম| মিশরের লোকরা আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি নিষ্ঠুর ছিলেন| 16 কিন্তু আমরা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছিলাম| প্রভু আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন এবং আমাদের সাহায্যের জন্য একজন দূত পাঠিয়েছিলেন| প্রভু আমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছেন|
“এখন আমরা আপনার দেশের প্রান্তে কাদেশে আছি| 17 দয়া করে আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন| আমরা কোনো শস্য ক্ষেত অথবা কোনো দ্রাক্ষাক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাবো না| আমরা আপনাদের কোনো জলাশয় থেকে জল পান করবো না| আমরা রাজপথ বরাবর যাতায়াত করবো| আমরা ঐ রাস্তা থেকে কোনো সময়ই ডানদিকে অথবা বাঁদিকে যাবো না| যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আপনার দেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই রাস্তার ওপরেই থাকবো|”
 
18 কিন্তু ইদোমীয় রাজা উত্তর দিলেন, “তোমরা আমার দেশের মধ্য দিয়ে যেতে পারবে না| তোমরা আমার দেশের মধ্য দিয়ে যাবার চেষ্টা করলে আমরা তরবারি নিয়ে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবো|”
19 ইস্রায়েলের লোকরা উত্তর দিল, “আমরা প্রধান রাস্তা দিয়ে যাবো| যদি আমাদের পশুরা আপনাদের কোনো জল পান করে, আমরা তার জন্য মূল্য দেবো| আমরা কেবলমাত্র আপনার দেশের মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে যেতে চাই| আর কিছু নয়|”
20 কিন্তু ইদোম আবার উত্তর দিলেন, “আমরা তোমাদের আমাদের দেশের মধ্য দিয়ে আসার অনুমতি দেবো না|”
এরপর ইদোমীয় রাজা এক বিশাল এবং শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী জড়ো করলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য গেলেন| 21 ইদোমীয় রাজা তাঁর দেশের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের যাওয়া নিষেধ করলেন| তাই ইস্রায়েলের লোকরা ঘুরে অন্য পথে গেল|
হারোণ মারা গেলেন
22 ইস্রায়েলের লোকরা কাদেশ থেকে হোর পর্বতের দিকে যাত্রা করল| 23 হোর পর্বত ছিল ইদোম সীমানার কাছে| এখানেই প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, 24 “হারোণের মৃত্যুর সময় হয়েছে এবং তার পূর্বপুরুষদের কাছে যাওয়ার সময় হয়েছে| যে দেশটা আমি ইস্রায়েলের লোকদের দেব বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম, হারোণ সেই দেশে প্রবেশ করবে না| মোশি, আমি একথা তোমাকেও বললাম, কারণ তুমি এবং হারোণ দুজনেই মরীবার জলের ধারে দেওয়া আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করেছিলে|
25 “এখন হারোণ এবং তার পুত্র ইলীয়াসরকে হোর পর্বতের ওপরে নিয়ে এসো| 26 হারোণের বিশেষ বস্ত্র তার কাছ থেকে নিয়ে এসো এবং সেই বস্ত্রাদি তার পুত্র ইলীয়াসরকে পরিয়ে দাও| সেখানে পর্বতের ওপরে হারোণের মৃত্যু হবে| সে তার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে|”
27 মোশি প্রভুর আজ্ঞা পালন করলেন| মোশি, হারোণ এবং ইলীয়াসর হোর পর্বতের ওপরে গেলেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোক তাদের সেখানে যেতে দেখল| 28 মোশি হারোণের বিশেষ পোশাক খুলে নিলেন এবং হারোণের পুত্র ইলীয়াসরকে সেই সব পোশাক পরিয়ে দিলেন| এরপর পর্বতের চূড়ায় হারোণ মারা গেলে মোশি এবং ইলীয়াসর পর্বত থেকে নেমে এলেন| 29 ইস্রায়েলের সকল লোক হারোণের মৃত্যুর খবর জানল| এই কারণে ইস্রায়েলের প্রত্যেক ব্যক্তি 30 দিন শোক পালন করল|