19
স্বর্গের লোকরা ঈশ্বরের প্রশংসা করল
1 এরপর আমি স্বর্গে এক বিশাল জনতার কলরব শুনলাম৷ সেই লোকরা বলছে:
“হাল্লিলুইয়া!
জয়, মহিমা ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই,
2 কারণ তাঁর বিচারসকল সত্য ও ন্যায়৷
তিনি সেই মহান গণিকার বিচার নিষ্পন্ন করেছেন,
যে তার যৌন পাপ দ্বারা পৃথিবীকে কলুষিত করত৷
ঈশ্বরের দাসদের রক্তপাতের প্রতিশোধ নিতে ঈশ্বর সেই বেশ্যাকে শাস্তি দিয়েছেন৷”
3 তারপর স্বর্গের সেই লোকেরা বলে উঠল:
“হাল্লিলুইয়া!
সেই বেশ্যা ভস্মীভূত হবে এবং যুগ যুগ ধরে তার ধোঁয়া উঠবে৷”
4 এরপর সেই চব্বিশজন প্রাচীন ও চারজন প্রাণী সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন, সেই ঈশ্বরের চরণে মাথা নত করে তাঁর উপাসনা করে বললেন:
“আমেন, হাল্লিলুইয়া!”
5 পরে সিংহাসন থেকে এক বাণী নির্গত হল, কে যেন বলে উঠল:
“হে আমার দাসরা, তোমরা যারা তাঁকে ভয় কর,
তোমরা ক্ষুদ্র কি মহান, তোমরা সকলে ঈশ্বরের প্রশংসা কর!”
6 পরে আমি বিরাট জনসমুদ্রের রব, প্রবল জলকল্লোল ও প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এই বাণী শুনলাম:
“হাল্লিলুইয়া!
আমাদের প্রভু যিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর,
তিনি রাজত্ব শুরু করেছেন৷
7 এস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, আর তাঁর মহিমা করি,
কারণ মেষশাবকের বিবাহের দিন এল৷
তাঁর বধূও বিবাহের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে৷
8 তাকে পরিধান করতে দেওয়া হল
শুচি শুভ্র উজ্জ্বল মসীনার বসন৷”
(সেই মসীনার বসন হল ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সত্কর্মের প্রতীক৷)
9 এরপর তিনি আমায় বললেন, “তুমি এই কথা লেখ৷ ধন্য তারা, যাঁরা মেষশাবকের বিবাহে নিমন্ত্রিত হয়েছে৷” তারপর দূত আমায় বললেন, “এগুলি ঈশ্বরের সত্য বাক্য৷”
10 আমি তাঁকে উপাসনা করার জন্য তাঁর চরণে মাথা নত করলাম৷ কিন্তু স্বর্গদূত আমায় বললেন, “আমার উপাসনা করো না! আমি তোমারই মত এবং তোমার যে ভাইরা যীশুর সাক্ষ্য ধরে রয়েছে তাদের মতো এক দাস৷ ঈশ্বরেরই উপাসনা কর, কারণ ভাববাদীর আত্মাই হল যীশুর সাক্ষ্য৷”
শ্বেত অশ্বের চালক
11 এরপর আমি দেখলাম, স্বর্গ উন্মুক্ত, আর সেখানে সাদা একটা ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে৷ তার ওপর যিনি বসে আছেন, তাঁর নাম “বিশ্বস্ত ও সত্যময়” আর তিনি ন্যায়সিদ্ধ বিচার করেন ও যুদ্ধ করেন৷
12 আগুনের শিখার মতো তাঁর চোখ, আর তাঁর মাথায় অনেকগুলি মুকুট আছে; সেই মুকুটগুলির উপর এমন এক নাম লেখা আছে, যার অর্থ তিনি ছাড়া অন্য আর কেউ জানে না৷
13 রক্তে ডোবানো পোশাক তাঁর পরণে; তাঁর নাম ঈশ্বরের বাক্য৷
14 স্বর্গের সেনাবাহিনী সাদা ঘোড়ায় চড়ে তাঁর পেছনে পেছনে চলেছিল৷ তাদের পরণে ছিল শুচিশুভ্র মসীনার পোশাক৷
15 একটি ধারালো তরবারি তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছিল, যা দিয়ে তিনি পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে আঘাত করবেন৷ লৌহ যষ্টি হাতে জাতিবৃন্দের ওপর তিনি শাসন পরিচালনা করবেন৷ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধের কুণ্ডে তিনি সব দ্রাক্ষা মাড়াই করবেন৷
16 তাঁর পোশাকে ও উরুতে লেখা আছে এই নাম:
“রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু৷”
17 পরে আমি দেখলাম, একজন স্বর্গদূত সূর্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন৷ তিনি উঁচু আকাশ পথে যে সব পাখি উড়ে যাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে খুব জোরে চিৎকার করে বললেন: “এস, ঈশ্বর যে মহাভোজের আয়োজন করেছেন, তার জন্য এক জায়গায় জড়ো হও৷
18 এক, রাজাদের, প্রধান সেনাপতিদের ও বীরপুরুষদের মাংস, ঘোড়া ও ঘোড়-সওয়ারদের মাংস, স্বাধীন অথবা ক্রীতদাস, ক্ষুদ্র অথবা মহান সকল মানুষের মাংস খেয়ে যাও৷”
19 তখন আমি দেখলাম ঐ ঘোড়ার ওপর যিনি বসেছিলেন, তিনি ও তাঁর সৈন্যদের সঙ্গে সেই পশু ও পৃথিবীর রাজারা তাদের সমস্ত সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করার জন্য একত্র হল৷
20 কিন্তু সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীকে ধরা হল৷ এই সেই ভণ্ড ভাববাদী, যে পশুর জন্য অলৌকিক কাজ করেছিল৷ এই অলৌকিক কাজের দ্বারা ভণ্ড ভাববাদী তাদের প্রতারণা করেছিল যাদের সেই পশুর চিহ্ন ছিল এবং যারা তার উপাসনা করেছিল৷ ভণ্ড ভাববাদী এবং পশুটিকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷
21 যারা বাকী থাকল তারা সকলে সেই সাদা ঘোড়ার সওয়ারীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ধারালো তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়ল; আর সমস্ত পাখি তাদের মাংস খেয়ে তৃপ্ত হল৷