2 পিতর
গ্রন্থস্বত্ব
2 পিতরের লেখক হচ্ছেন প্রেরিত পিতর, যেমনটি 2 পিতর 1:1 পদে উল্লিখিত হয়েছে, তিনি ওই দাবিটি 3:1 পদে করেন, 2 পিতরের লেখক যীশুর চেহারার পরিবর্তনকে প্রতক্ষ্য করেছেন (1:16-18), সাংক্ষেপিক সুসমাচার অনুসারে, পিতর তিনজন শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন (অন্য দুই ব্যক্তি যাকোব এবং যোহন)। 2 পিতরের লেখক আবারও ঘটনাকে উল্লেখ করে যে তার মৃত্যু নির্ধারিত হচ্ছে যা মনে হয় শহীদের মৃত্যু (1:14); যোহন 21:18-19 এর মধ্যে, যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে পিতর শহীদের মৃত্যু বরণ করবেন যার পরে কারাবাসের দিন হতে দেখা যায়।
রচনার সময় এবং স্থান
আনুমাণিক 65 থেকে 68 খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়।
এটা সম্ভবত রোম থেকে লেখা হয়েছিল যেখানে প্রেরিত জীবনের শেষ বছরগুলো কাটিয়েছিলেন।
গ্রাহক
সেই একই শোতৃবৃন্দের প্রতি ভালোভাবে লেখা হয়ে থাকবে যেমন প্রথম পিতর তাদের নিকট লেখা হয়েছিল যারা এশিয়া মাইনরের উত্তরাঞ্চল থেকে ছিল।
উদ্দেশ্য
পিতর খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসের ভিত্তির একটি অভিজ্ঞান প্রদান করতে লিখেছিলেন (1:12-13, 16-21) এবং বিশ্বাসের মধ্যে বিশ্বাসীদের ভবিষ্যত প্রজন্মদেরকে নির্দেশ দিতে (1:15) এটার প্রেরিত সংক্রান্ত ঐতিহ্যকে সুনিশ্চিত কোরে, পিতর লিখেছিলেন কারণ তার দিন কম ছিল এবং তিনি জানতেন যে ঈশ্বরের লোকেরা অনেক বিপদের সম্মুখীন হচ্ছিল (1:13-14; 2:1-3), পিতর তার পাঠকদের মিথ্যা শিক্ষকদের আগমন সম্বন্ধে সাবধান করতে লিখেছিলেন (2:1-22) যারা প্রভুর শীঘ্র প্রত্যাবর্তনকে অস্বীকার করে।
বিষয়
মিথ্যা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সাবধানবাণী
রূপরেখা
1. অভিবাদন — 1:1, 2
2. খ্রিষ্টিয় গুণের মধ্যে বৃদ্ধি — 1:3-11
3. পিতরের বার্তার উদ্দেশ্য — 1:12-21
4. মিথ্যা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সাবধানবাণী — 2:1-22
5. খ্রীষ্টের প্রত্যাবর্তন — 3:1-16
6. উপসংহার — 3:17, 18
1
বিশ্বাসে দৃঢ় থাকবার বিষয়ে উপদেশ।
শিমোন পিতর, যীশু খ্রীষ্টের দাস ও প্রেরিত, যারা আমাদের ঈশ্বরের ও উদ্ধারকর্তা যীশু খ্রীষ্টের ধার্ম্মিকতায় আমাদের সাথে সমানভাবে বহুমূল্য বিশ্বাস প্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের নিকটে এই চিঠি লিখছি। ঈশ্বরের এবং আমাদের প্রভু যীশুর তত্ত্বজ্ঞানে অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের প্রতি বৃদ্ধি হোক।
কাউকে ডাকা এবং মনোনীত করা।
কারণ ঈশ্বর নিজের গৌরবে ও ভালোগুনে আমাদেরকে আহ্বান করেছেন, তাঁর তত্ত্বজ্ঞানের মাধ্যমে তাঁর ঈশ্বরীয় শক্তি আমাদেরকে জীবন ও ভক্তি সম্বন্ধীয় সব বিষয় প্রদান করেছে। আর ঐ গৌরবে ও গুনে তিনি আমাদেরকে মূল্যবান এবং মহান প্রতিজ্ঞা প্রদান করেছেন, যেন তার মাধ্যমে তোমরা এই পৃথিবীতে দুর্নীতিগ্রস্থ বিদ্বেষপূর্ণ ইচ্ছা থেকে পালিয়ে গিয়ে, ঈশ্বরীয় স্বভাবের সহভাগী হও। আর এরই কারণে, তোমরা সম্পূর্ণ আগ্রহী হয়ে নিজেদের বিশ্বাসের মাধ্যমে সদগুন, ও সদগুনের মাধ্যমে জ্ঞান, ও জ্ঞানের মাধ্যমে আত্মসংযম, ও আত্মসংযমের মাধ্যমে ধৈর্য্য, ও ধৈর্য্যের মাধ্যমে ধার্ম্মিকতা, ও ধার্মিকতার দ্বারা ভাইয়ের স্নেহ, ও ভ্রাতৃস্নেহের মাধ্যমে ভালবাসা লাভ কর। কারণ এই সব যদি তোমাদের মধ্যে থাকে ও নিজে বেড়ে ওঠে, তবে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের তত্ত্বজ্ঞান সম্বন্ধে তোমাদেরকে অলস কি ফলহীন থাকতে দেবে না। কারণ এই সব যার নেই, সে অন্ধ, বেশি দূর দেখতে পায় না, তিনি নিজের পূর্বের পাপসমূহ মার্জনা করে পরিষ্কার করতে ভুলে গিয়েছে। 10 অতএব, হে ভাইয়েরা, তোমাদের যে ডেকেছেন ও মনোনীত, তা নিশ্চিত করতে আরো ভালো কর, কারণ এ সব করলে তোমরা কখনও হোঁচট খাবে না; 11 কারণ এই ভাবে আমাদের প্রভু ও মুক্তিদাতা যীশু খ্রীষ্টের অনন্ত রাজ্যে প্রবেশ করবার অধিকার প্রচুরভাবে তোমাদেরকে দেওয়া যাবে।
শাস্ত্রীয় বাক্যের ভবিষ্যৎবাণী।
12 এই কারণ আমি তোমাদেরকে এই সব সবদিন মনে করে দিতে প্রস্তুত থাকব; যদিও তোমরা এ সব জান এবং এখন সত্যে দৃঢ় আছ। 13 আর আমি যত দিন এই তাঁবুতে থাকি, ততদিন তোমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে জাগিয়ে রাখা ঠিক মনে করি। 14 কারণ আমি জানি, আমার এই তাঁবু তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া হবে, তা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টই আমাকে জানিয়েছেন। 15 আর তোমরা যাতে আমার যাত্রার পরে সবদিন এই সব মনে করতে পার, তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। 16 কারণ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্ষমতা ও আবির্ভাবের বিষয় যখন তোমাদেরকে জানিয়েছিলাম, তখন আমরা চালাকি করে গল্পের অনুগামী হয়নি, কিন্তু তাঁর মহিমার প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছিলাম। 17 ফলে প্রভু পিতা ঈশ্বর থেকে সম্মান ও গৌরব পেয়েছিলেন, সেই মহিমাযুক্ত গৌরব থেকে তার কাছে এই বাণী এসেছিল, “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, যাকে আমি ভালবাসি, এতেই আমি সন্তুষ্ট।” 18 আর স্বর্গ থেকে আসা সেই বাণী আমরাই শুনেছি, যখন তাঁর সঙ্গে পবিত্র পর্বতে ছিলাম। 19 আর ভাববাদীর বাক্য দৃঢ়তর হয়ে আমাদের কাছে রয়েছে; তোমরা যে সেই বাণীর প্রতি মনোযোগ করছ, তা ভালই করছ; তা এমন এক প্রদীপের সমান, যা যে পর্যন্ত দিনের র শুরু না হয় এবং সকালের তারা তোমাদের হৃদয়ে না ওঠে, সেই পর্যন্ত অন্ধকারময় জায়গায় আলো দেয়। 20 প্রথমে এটা জানো যে, শাস্ত্রীয় কোনো ভাববাণী বক্তার নিজের ব্যাখ্যার বিষয় না; 21 কারণ ভাববাণী কখনও মানুষের ইচ্ছা অনুসারে আসেনি, কিন্তু মানুষেরা পবিত্র আত্মার মাধ্যমে চালিত হয়ে ঈশ্বর থেকে যা পেয়েছেন, তাই বলেছেন।