পবিত্র ইঞ্জিল শরিফ ৬ নম্বর ছিপারা
আল-রোমান
পরিচিতি
আছমানি কিতাব পবিত্র ইঞ্জিল শরিফর পয়লা হিস্যা মানি, পয়লা পাচ ছিপারার মাজে হজরত ইছা আল-মসীর জনম, তান কাম-কাজ, তালিম, তান মউত, মউতর বাদর জিন্দেগির বয়ানি। তান সাহাবি অকলর কাম-কাজ, আর হউ জমানার জমাত অকলর কিছু ইতিহাস।
আর ইঞ্জিল শরিফর দুছরা হিস্যা অইলো, চিঠির আকারে লেখা বাদর ২১ ছিপারা। অখনাইন পড়লে আমরা বুজতাম পারমু, হউ আমলর ইছায়ী জমাত অকলর হাল-হকিকত, চাল-চলন, তারার ইমান আর দুনিয়াবি আচার-বেবহার কিলাখান আছিল। অউ আল-রোমান ছিপারা অইলো, ই হিস্যার হকল পয়লা ছিপারা, ইখান বউত মুল্যবান।
অউ ছিপারার লেখক হজরত ইছা আল-মসীর সাহাবি হজরত পাউলুছ (রা:)। হজরত ইছায় দুনিয়া থাকি বেহেস্তো তশরিফ নেওয়ার অনুমান ২৫ বছর বাদে অউ ছিপারা লেখছইন। ইখান লেখার আগে তাইন কুনুদিন রোম টাউনো গেছইন না। অখন তান খিয়াল অইলো, নানান দেশো তবলিগ করি করি, রোম টাউনো যাইতা, বাদে অন থাকি স্পেন দেশো যাইবা। এরলাগি রোম টাউনর ইছায়ী উম্মত অকলরে তান সফরর কথা জানাইরা। এরলগে বউত জরুরি তালিম আর নছিয়ত জানাইরা।
ই ছিপারার ১-৮ রুকুর মাজে তান তালিমর খুব গুরুত্বপুর্ন নছিয়ত আছে, খাছ করি হজরত ইছার উপরে ইমান আনলে মানুষ কেমনে আল্লার দরবারো বে-কছুর খালাছ হিসাবে গইন্য অয়, আর আল্লার দেওয়া পাক রুহ পাইয়া হারি কিলা পাক-পবিত্র জিন্দেগি কাটায়, যেলা ১:১৭ আয়াতো লেখা আছে, “ইমানর বলেউ বে-কছুর খালাছ অওয়া জনর জান বাচিবো।”
৯-১১ রুকুত লেখা আছে, হজরত মুছার (আ:) শরিয়তর হুকুম-আহকাম পুরাপুর মানতে অপারগ অওয়ায় বনি ইসরাইল জাতি আল্লার নাফরমান বনিগেছে, আর অউ শরিয়তর উপরে ভরসা করায় তারা হজরত ইছার খুশ-খবরিরেও এলামি করছে। আসলে অউ খুশ-খবরির উপরে ইমান আনলেউ হেশ-মেশ তারার জান বাচিব।
বাদে ১২-১৬ রুকুত আছে, আল্লার দরবারো কবুল কুরবানি হিসাবে কিলা নিজরে সপি দেওয়া যায়, আর জমাতর মানষর লাগি বাস্তব জিন্দেগির চাল-চলনর তালিম, দেশর রাজা বা সরকারর লগে মুমিন অকলর সম্পর্ক কিলাখান অইবো, অতা নানান বেয়াপারে যুক্তি-তর্কর নমুনায় অউ ছিপারা লেখা অইছে।
এরমাজে আছে,
(ক) আল্লার দরবারো মানুষ কিলা বে-কছুর খালাছ অইন ১-৮ রুকু
(খ) শরিয়তে অপারগ অইলেও বনি ইসরাইলর হেশ রক্ষা ইমানে ৯-১১ রুকু
(গ) ইছায়ী মুমিন অকলর চাল-চলন ১২-১৬ রুকু
আল্লার দরবারো মানুষ কিলা বে-কছুর খালাছ অইন (১:১-৮:৩৯)
1
মানষর জান বাচানির খুশ-খবরি
আমি পাউলুছ তো হজরত ইছা আল-মসীর গুলাম। রোমান বাদশাইর রাজধানি রোম টাউনর মুমিন অকলর গেছে অউ ছহিফা খান লেখরাম। আল্লা পাকে আমারে পছন্দ করিয়া আনছইন আল-মসীর সাহাবি অওয়ার লাগি আর তান বাতাইল খুশ-খবরি তবলিগ করার লাগি। আল্লায় তান নবী অকলর মাজদি পাক কিতাবর মাজে অউ খুশ-খবরির কথা আগেউ ওয়াদা করছইন। 3-4 অউ খুশ-খবরি অইলো তান খাছ মায়ার জন ইছা আল-মসীর বেয়াপারে। তাইনউ আমরার মালিক। রক্ত-মাংসর ছিলছিলায় তাইন অইলা হজরত দাউদ নবীর আওলাদ, আর আল্লাই পাক রুহুর কুদরতিয়ে মুর্দা থাকি জিন্দা অইয়া ইবনুল্লা হিসাবে জাইর অইছইন। তান নাম উজিলা করার লাগি, তান মাজদিউ আমরা আল্লার নিয়ামত আর সাহাবি পদ পাইছি, যাতে হকল জাতির মানষে ইমান আনিয়া আল্লার বাইধ্য অইয়া চলে। অউ মানষর মাজে তুমরাও আছো। আল্লায় তো তুমরারে দাওত করিয়া আনছইন, ইছা আল-মসীর আপন জন অওয়ার লাগি।
তে অউ রোম টাউনো আল্লার যতো মায়ার বন্দা অকল আছইন, আল্লায় তান পাক বন্দা অওয়ার লাগি যেরারে দাওত করিয়া আনছইন, তুমরা হকলর গেছে আমি অউ চিঠি খান লেখরাম। আমরার গাইবি বাফ আল্লা পাক আর হজরত ইছা আল-মসীয়ে তুমরারে রহমত আর শান্তি দান করউক্কা।
আমি পয়লাউ কইরাম, তুমরার মজবুত ইমানর কথা আস্তা দুনিয়াইর মাজে রটিগেছে করি, আমি ইছা আল-মসীর নামে আমার আল্লার শুকরিয়া আদায় কররাম। আল্লার খাছ মায়ার জন ইবনুল্লার বেয়াপারে খুশ-খবরি তবলিগ করিয়া, আমি দিলে-জানে আল্লার এবাদত কররাম। এক আল্লাউ সাক্ষি আছইন, আমি পরতেক বার মুনাজাতর সময় তুমরার কথা ইয়াদ করি। 10 আমি হামেশা অউ কথা মাগিরাম, অতদিন বাদে অইলেও আল্লার মর্জিয়ে যেকুনু মন্তে আমি যানু তুমরার গেছে আইতাম পারি। 11 আমি তুমরার লগে দেখা করতাম চাইরাম, যাতে রুহানি কুনু নিয়ামত দিয়া তুমরারে বলবান করতাম পারি। 12 মানি, আমার ইমান দেখিয়া তুমরা হকলে আর তুমরার ইমান দেখিয়া আমি নিজেও উত্‍সাহ পাই।
13 ও ভাইয়াইন হুনো, আমি বউত বার তুমরার গেছে আইতাম চাইছি, অইলে বার বার বাধা আইছে। নানান জাগাত গিয়া ভিন জাতির গেছে তবলিগ করিয়া যেলা ফল পাইছি, তুমরার গেছেও অলা ফল দেখার আশায় আইতাম চাইরাম। 14 ভদ্র ইউনানি জাতি বা অভদ্র বর্বর জাতি, শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, হকলর লাগিউ তো আমার এক হমান দায়-ভার আছে। 15 এরলাগি তুমরা যেরা রোম টাউনো বসত কররায়, আমি আমার সাইধ্য মাফিক তুমরার গেছেও খুশ-খবরি তবলিগ করার লাগি খিয়ালি।
16 কারন হজরত ইছা আল-মসীর বেয়াপারে খুশ-খবরি তবলিগ করতে আমি কুনু শরম মনো করি না, অউ খুশ-খবরি হুনিয়া যেরা ইমান আনে, তারার জান বাচানির লাগি ইটা অইলো আল্লাই বল। পয়লা বনি ইসরাইলর লাগি যেরা এক আল্লা মানইন, বাদে বে-দীন ভিন জাতি অকলর লাগি। 17 অউ খুশ-খবরির মাজেউ তো বাতাইল অইছে, আল্লায় কিলা মানষরে বে-কছুর খালাছ হিসাবে কবুল করইন। খালি ইমানর মাজদিউ মানষরে আউয়াল থাকি আখের পর্যন্ত বে-কছুর খালাছ কইয়া গইন্য করা অয়। যেলা কিতাবো লেখা আছে, “ইমানর বলেউ বে-কছুর খালাছ অওয়া জনর জান বাচিবো।”
হকল মানুষউ নাফরমান
18 মানষে নিজর নাফরমানি দিয়া আল্লাই হকরে লুকাইয়া রাখে। তারার নাফরমানি আর আল্লার বায় ডর-খফ না থাকায় আছমান থাকি তারার উপরে গজব নাজিল অয়। 19 আল্লার বেয়াপারে যতখান বুজার তাক্কত আছে ইতা মানষর গেছে পরিস্কার, আল্লায় নিজেউ তো ইতা জাইর করছইন। 20 তান যেতা গুনাগুন মানষর আ-দেখা, মানি তান চিরকালিন খেমতা আর আল্লাই স্বভাব, ইতা দুনিয়া পয়দা অওয়ার আগ থাকিউ পরিস্কার ফুটিয়া উঠছে। তান পয়দা করা জিনিস দেখলেউ মানষে ইতা বুজতো পারে। এরলাগিউ তানরে চিনিনা কইয়া কুনু মানষে ভানা দেখানির উপায় নাই। 21 আল্লার বেয়াপারে অতোতা জানার বাদেও মানষে তানরে আল্লা ভাবিয়া তান এবাদত-বন্দেগি আর শুকুর-গুজারি না করায়, তারার বিচার-বিবেক অসার অইগেছে আর বেআখল মন আন্দাইর অইগেছে। 22 যুদিও তারা নিজরে আখলদার মনো করইন, আসলে তারা বেআখল। 23 তারা চিরকালিন জিন্দা আল্লার এবাদত বাদ দিয়া অস্থায়ী মানুষ, পশু-পাখি, আর বুকে চলরা জানদারর মুর্তি বানাইয়া অতার পুজা করছে, আল্লার পাওনা গৌরব-মহিমা অতারে দিছে।
24 এরলাগি আল্লা পাকেও তারার দিলর বদ খাইশ মাফিক, তারারে নফরতি কামর আতো ছাড়ি দিছইন, অতার দায় তারা একে-অইন্যর লগে বদমাইশি-বেইজ্জতি করের। 25 তারা আল্লার হকরে বাদ দিয়া মিছারে পছন্দ করছে। পয়দা কররা আল্লারে বাদ দিয়া, তান পয়দা করা জিনিসর পুজা করছে। অইলে যুগে যুগে চিরকাল হকল তারিফ একমাত্র পয়দা কররা আল্লারউ। আমিন।
26 মানষে অলাখান নফরতি কাম করের দেখিয়া, আল্লায়ও তারারে অউ বদ খাইশর আতো সপি দিছইন। অতার বেটিন্তেও জামাইর লগে মিলা-মিশা বাদ দিয়া অইন্য বেটিন্তর লগে খবিছি কাম করছে। 27 অউলা বেটাইন্তেও বেটিন্তর লগে মিলা-মিশা বাদ দিয়া অইন্য বেটার লগে মিলা-মিশার লাগি পাগল অইগেছে, বেটাইন্তে বেটাইন্তর লগে খবিছি কাম করছে। এরলাগি তারা পরতেকর জিন্দেগিত যারযির বদ কামর সাজা পাইরা। 28 মানষে তার দিল থাকি আল্লা পাকরে মানের না দেখিয়া, আল্লায়ও তারারে অলা বদ খাইশর খবিছি দিলর আতো ছাড়ি দিছইন, এরলাগি তারা অতা করাত রয়। 29 তারা হকল নমুনার নাফরমানি, বদ কাম, লোভ-লালছ, ইংসা-নিন্দা, খুন-খারাপি, মারা-মারি, ছল-চতুরি আর কানা-কানি করার লাগি উস্তাদ। 30 তারা মানষর গিবত গায়, আর আল্লারে ঘিন্নায়। তারা বদ-মিজাজি, অহংকারি, বড়াই-বেটাগিরি আর নয়া নয়া নাফরমানির ধান্দায় থাকে। তারা মা-বাফরও অবাইধ্য। 31 নেকি-বদি বুজার আখল নাই, ওয়াদা খেলাফ কারি, পাষান, ইতার দিলো কুনু দয়া-মায়া নাই। 32 তারা তো আল্লার ই বিচারর কথা ভালা করিউ জানে, যেরা ইলাখান কাম করে, তারার সাজা অইবো মউত। ইখান জানিয়াও, তারা খালি নিজে ইতা করে না, বাকি যেরা ইলা কাম করে, তারার পক্ষেও সায় দেয়।