পবিত্র তৌরাত শরিফ পয়লা ছিপারা
পয়দা নামা
ছিলটি ভাষায় তরজমা
পয়দা নামা - পরিচিতি
তৌরাত শরিফর ৫খান ছিপারার মাজে পয়লা ছিপারা অইলো ‘পয়দা নামা’। অউ ছিপারার পয়লা আয়াতো আছে “পয়লাউ আল্লা,” আর হেশ আয়াতো আছে হজরত ইউছুফ (আঃ) অর মউত। আর হাছাউ আমরা দুনিয়া পয়দা থনে হজরত ইউছুফ (আঃ) পর্যন্ত বউত নবীর বয়ানি ই ছিপারাত পাই। পয়দা নামার মুল বিষয় অইলো, আদম জাতিয়ে ইবলিছ-শয়তানর ভুল পরামিশ হুনিয়া হারি নাফরমান বনিগেলা। বাদে আল্লা পাকে অউ নাফরমানি থাকি মুক্তি পাওয়ার লাগি এক পথ দেখাইলা, যাতে আদম জাতি হিরবার তান দিদার-দরশন পাইতা পারইন।
অউ পথরে দুই নমুনায় দেখাইল অইছে। পয়লা, আল্লায় নানান নবীর লগে তান দিদার পাওয়ার ওয়াদা-চুক্তি করলা, আর হউ নবীর উম্মতেও এর নিয়ামত-ফজিলত পাইলা। আর দুছরা নমুনা অইলো, আল্লা পাকে ওয়াদা করলা, তান পাঠাইল হউ নবী অকলর ছিলছিলা থাকি অলা এক পবিত্র জন ই দুনিয়াত আইবা, আইলে এন উছিলায় দুনিয়ার হকল জাতিয়ে আল্লার দয়া আর রহম-বরকত পাইবা, মানষে দুনিয়া আর আখেরাতো নাজাত পাইবা। যেমন, আদম-হাওয়ার ছামনে তাইন শয়তানরে কইলা, “বেটি মানষর বংশে তুমার কল্লা গুড়া করবো” (৩ রুকু ১৫ আয়াত)। মানি, হউ পবিত্র জনে শয়তানর হকল খেমতা আর বল-শক্তিরে বিনাশ করবা, এইন জনম লইবা এক বেটি মানষর ঘরো, বাদে আরক কিতাবো আল্লায় জানাইছইন এন জনম অইবো আবিয়াতি এক সতী নারীর ঘরো। আর হজরত ইব্রাহিম (আঃ) রে কইলা, “তুমার বংশর উছিলায় দুনিয়ার হকল জাতিয়ে বরকত হাছিল করবা” (২২:১৮ আয়াত)। বাদে তাইন হজরত ইব্রাহিমরে জানাইছইন, হউ পবিত্র আওলাদ আইবা তান হুরু পুয়া হজরত ইছহাক (আঃ) অর পুয়া ইয়াকুব নবীর খান্দানো।
আল্লায় হজরত ইয়াকুব (আঃ) রে নয়া নাম দিছলা হজরত ইছরাইল, এরলাগি ইয়াকুবর বংশধররে কওয়া অয় ‘বনি ইছরাইল’, মানি হজরত ইছরাইলর আওলাদ অকল। পয়দা নামা ছিপারার হেশ অংশত আছে, হজরত ইউছুফ (আঃ) কিলা মিসর দেশো গুলাম বনলা আর বাদে মিসর দেশর রাজা বনিয়া নিদানর আত থাকি জান বাচানির লাগি, তান নিজর বাবা আর ভাইয়াইনরেও অউ মিসরো আনছইন। অউ নমুনায় বনি ইছরাইল মিসরো বসত করা শুরু অইলো।
এরমাজে আছে,
হজরত আদম (আঃ) —দুনিয়ার পয়দা ১—৫ রুকু
হজরত নুহ (আঃ) —পানির গজব ৬—১০ রুকু
হজরত ইব্রাহিম (আঃ) —আল্লার ওয়াদা ১১—২৩ রুকু
হজরত ইছহাক (আঃ) —হিরবার আল্লার ওয়াদা ২৪—২৬ রুকু
হজরত ইয়াকুব (আঃ) —বনি ইছরাইলর শুরু ২৭—৩৬ রুকু
হজরত ইউছুফ (আঃ) —বনি ইছরাইল মিসর দেশো আইলা ৩৭—৫০ রুকু
হজরত আদম (আঃ) (১:১—৫:৩২)
1
আছমান-জমিন পয়দা
পয়লাউ আল্লায় আছমান আর দুনিয়া পয়দা করলা। দুনিয়াই নিরাকার আর খালি আছিল, গইন পানির উপরে পুরা আন্দাইর আছিল। আল্লার রুহ এর উপরে চলাচল করতা। বাদে আল্লায় ফরমাইলা ফর অউক, আর ফর অইলো। আল্লায় দেখলা ফর ভালা। তাইন আন্দাইর থাকি ফররে আলগা করিয়া এর নাম রাখলা দিন, আর আন্দাইরর নাম রাখলা রাইত। হাইঞ্জা গেল, বিয়ানও গেল, ইকটা অইলো পয়লা দিন।
বাদে আল্লায় ফরমাইলা, পানির মাজে গুম্বুজর লাখান ফাক জাগা অউক, আর পানি দুই ভাগ অইযাউক। আর আল্লায় ফাক জাগা পয়দা করিয়া, তলর আর উপরর পানি আলগা করলা। আর অউলা অইলো। আল্লায় গুম্বুজর লাখান যে জাগা বানাইলা, তার নাম রাখলা আছমান। হাইঞ্জা গেল, বিয়ানও গেল, ইকটা অইলো দুই নম্বর দিন।
এরবাদে আল্লায় ফরমাইলা, আছমানর তলর পানি এক জাগাত দলা অউক, আর হুকনা জাগা দেখা যাউক। আর অউলা অইলো। 10 আল্লায় হুকনা জাগার নাম রাখলা জমিন আর জমাইল পানির নাম দরিয়া। তাইন দেখলা ইতা ভালা। 11 বাদে আল্লায় ফরমাইলা, জমিনো ঘাস ফলউক; আর হকল জাতর বিচআলা লতা-পাতা গাছ-গাছালির জনম অউক। আর জমিনর উপরে হকল জাতর ফলর গাছও অউক, এরা নিজর জাতমত ফল ধরবো আর ফলর মাজে যারযির বিচও থাকবো। আর অউলা অইলো। 12 জমিনো ঘাস ফলিলো, হকল জাতর বিচআলা লতা-পাতা গাছ-বিরিক জন্মিলো। জমিনর উপরে হকল জাতর ফলর গাছ অইলো যেতায় যারযির জাতমত ফল ধরে, হি ফলর মাজে যারযির বিচও আছে। আল্লায় দেখলা ইতা ভালা। 13 হাইঞ্জা গেল, বিয়ানও গেল, ইকটা অইলো তিন নম্বর দিন।
14 বাদে আল্লায় ফরমাইলা, আছমানর মাজে অউলা চেরাগ অকল অউক, যারা রাইত থাকি দিনরে আলগা করে। ইতা আলগা আলগা দিন, বছর আর ইদ-উৎসবর নিশানা অইবো। 15 আছমান থাকি তারা দুনিয়াইর উপরে ফর দিবো। অউলাউ অইলো। 16 আল্লায় দুইটা বড় চেরাগ বানাইলা, এরমাজে বড়টারে দিনর উপরে বাদশাই করার লাগি আর হুরুটারে রাইতর উপরে। ইতা ছাড়া তাইন তেরা অকলও পয়দা করলা। 17 তাইন এরারে আছমানর মাজে বওয়াইলা যাতে তারা দুনিয়াইত ফর দেয়। 18 এরা দিন আর রাইতর উপরে বাদশাই করে, আন্দাইর থাকি ফররে আলগা করে। আল্লায় দেখলা ইতা ভালা। 19 হাইঞ্জা গেল, বিয়ানও গেল, ইকটা অইলো চাইর নম্বর দিন।
20 বাদে আল্লায় ফরমাইলা, পানির মাজে জানদার অকল পালে পালে ভরি যাউক, আর দুনিয়াইর উপরে আছমানর মাজে পাখিন উড়উক। 21 আর আল্লায় দরিয়ার বিরাট জানদার অকল, আর পানির মাজে পাল বান্দিয়া ঘুররা হকল জাতর জানদার পয়দা করলা, আর হকল জাতর পাখিও পয়দা করলা। তাইন দেখলা ইতা ভালা। 22 তাইন তারা হকলরে অউ লাখান বরকত নাজিল করলা, তুমরা ফলআলা অইয়া বাড়ো আর দরিয়ার পানি ভরি যাও, দুনিয়াইর মাজে পাখি অকলও বাড়উক। 23 হাইঞ্জা গেল, বিয়ানও গেল, ইকটা অইলো পাচ নম্বর দিন।
24 এরবাদে আল্লায় ফরমাইলা, মাটি থাকি অউলা জানদার অউক যারার নিজর জাত অকলরে বাড়াইবো, এরার মাজে পালা হেমান, মাটিত চলরা হুরু-মুরু জানদার আর জংলি জানুয়ার অকলও। অউলাউ অইলো। 25 আল্লায় দুনিয়াইর মাজে হকল জাতর জংলি জানুয়ার, পালা হেমান আর মাটির মাজে বুকে চলরা জানদার বানাইলা। তাইন দেখলা ইতা ভালা।
26 এরবাদে আল্লায় ফরমাইলা, আও আমরার ছুরতে আমরার লগে মিল রাখিয়া মানুষ বানাই। তারা দরিয়ার মাছ, আছমানর পাখি, জানুয়ার, মাটির মাজে বুকে চলরা জানদার, আর আস্তা দুনিয়াইর উপরে বাদশাই করউক।
27 তাইন তান নিজর ছুরতে মানুষ পয়দা করলা, এক্কেরে নিজর মত করি পয়দা করলা, পয়দা করলা বেটা আর বেটি। 28 আর তারারে বরকত নাজিল করিয়া কইলা, তুমিতাইন ফলআলা অইয়া বাড়িয়া দুনিয়াই ভরি যাও। দুনিয়াইরে শাসন করো, আর দরিয়ার মাছ, আছমানর পাখি, মাটির উপরে চলরা হকল জানদারর উপরে বাদশাই করো। 29 এরবাদে আল্লায় ফরমাইলা, হুনো, দুনিয়ার উপরর হকল জাতর বিচআলা গাছ-বিরিক, আর হকল জাতর ফলর গাছ যারার নিজর জাতমত ফল ধরে যার ফলর মাজে তারার নিজর বিচ আছে, ইতা হকলতা আমি তুমরার খানির লাগি দিলাম। 30 দুনিয়ার পরতেক জানুয়ার, আছমানর পাখিন, মাটির মাজে বুকে চলরা জানদার, ইতা হক্কল জানদারর খানির লাগি আমি হকল লতা-পাতা আর ঘাস দিলাম। অউলাউ অইলো। 31 আল্লায় তান পয়দা করা হকলতা দেখলা, ইতা হকলতাউ খুব ভালা অইছে। হাইঞ্জা গেল, বিয়ানও গেল। ইকটা অইলো ছয় নম্বর দিন।