পবিত্র ইঞ্জিল শরিফ ২৭ নম্বর ছিপারা
জাইরা কালাম
পরিচিতি
জাইরা কালাম ছিপারা খান অইলো, আছমানি কিতাব পবিত্র ইঞ্জিল শরিফর শেষ ছিপারা। আল্লা পাকর হুকুমে অউ ছিপারা লেখছইন, হজরত ইছা আল-মসীর মায়ার সাহাবি হজরত হান্নান (রা:)। হজরত ইছায় বেহেস্তো তশরিফ নেওয়ার বাদে ৬০-৬৫ বছরর কালো ইখান লেখা অইছে। অউ ছিপারা লেখার সময় আল-মসীর উম্মত অকলর উপরে খুব বেশি জুলুম-অত্যাচার আছিল। অউ হালতর মাজে মুমিন অকলরে আশা-উত্‍সাহ যুগানি, ছবর করা, আর অউ জুলুমর মাজেও ইমানে মজবুত রইয়া আল্লার দরবারর পুরুস্কারর লাগি জুইত রইতে পরামিশ দেওয়া অইছে। অউ ছিপারার লগে আগর জমানার নবী হজরত দানিয়াল, হজরত হেজকিল আর হজরত জাকারিয়ার (আ:) কিতাবর লগে বউত মিল আছে। এর মাজে লেখা আছে, কিয়ামতর আগে মুমিন অকলর হাল-হকিকত কিলা অইবো, কতো বেশি জুলুম-মছিবত অইবো, বাদে আল্লা পাকে হজরত ইছা আল-মসীর উছিলায় লান্নতি শয়তানরে এক্কেবারে বিনাশ করিলিবা, আর অউ সময় যেরা ইমানে মজবুত রইবা, তারা আল্লার দরবার থাকি পুরুস্কার পাইবা।
ই ছিপারাত পাইবা, সাতটা ইছায়ী জমাতর গেছে চিঠির ভাষায় বয়ানি লেখা আছে। অউ সাতো জমাতর ঠিকানা অইলোগি, হউ আমলর রোমান বাদশাইর আছিয়া দেশ, বর্তমান তুরস্ক দেশর পচ্চিম এলাকা। জমাতর হাল-হকিকত বুজা, আর আমরা জানিয়া হারি নিজর জিন্দেগিত আমল করা জরুর।
অউ ছিপারাত বউত বাতুনি নম্বর লেখা আছে। অউ নম্বরর কিছু মানি অউলা অইতো পারে:
২ = হকর বেয়াপারে সাক্ষি দেওয়া; হামেশা দুইজনর সাক্ষি জরুর।
৪ = আল্লার আরশ আর অউ বেয়াপারে; এরলাগি কাবা শরিফ অইলো চাইর কুনি, যাতে অউ আরশর লগে মিল দেখা যায়।
৬ = মানুষ আর গুনাগার মানষর বেয়াপারে; ছয় নম্বর দিন মানুষ পয়দা, আর ছয় অইলো পবিত্র নম্বর ৭ থাকি কম। এরলাগি ৬৬৬ বুজায়, কিয়ামতর আগে আস্তা দুনিয়ারে বে-পথে নিবার লাগি যে দর্জাল আইবো তার নামর মার্কা বা নম্বর।
৭ = আল্লার পবিত্র নম্বর, খাছ করি তান নিজর পুরাপুর কামর বেয়াপারে; সাত দিনে আছমান-জমিনর হকলতা পয়দা, অউ ছিপারার মাজে আল্লার পুরাপুর পবিত্র প্রজার সাত জমাত, আর তান পুরাপুর গজব ঢালিবার সাত নমুনা বার বার উল্লেখ করা অইছে।
১২ = আল্লার খাছ প্রজা; হজরত ইছার আগে আছিল বনি ইসরাইলর বারো খান্দান, বাদে হজরত ইছার বারোজন খাছ সাহাবি, এরলাগি ১২+১২=২৪ আর ১২×১২=১৪৪ বুজায়, হকল জমানার আল্লার খাছ প্রজা অকল।
১০০০ = আস্তা দুনিয়া বা পুরা এক যুগ; এরলাগি ১৪৪০০০ বুজায় হকল জমানার আর আস্তা দুনিয়ার আল্লার খাছ প্রজা অকল।
১২৬০ = সাত বছরর অর্ধেক দিন। উপরর সাত দেখবা।
জাইরা কালাম ছিপারার মাজে নানান নমুনার দরশনর মাজদি, অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত হকল জমানার কথা লেখা অইছে। ১ রুকু ১৯ আয়াতো আছে, “এরলাগিউ তুমি অখন যেতা দেখরায়, এর আগে যেতা ঘটিছে আর বাদে যেতা ঘটিবো, ইতা হক্কলতা তুমি লেখিয়া থও।”
এরমাজে আছে,
(ক) সাহাবি হান্নানর বেহেস্তি দরশন ১ রুকু
(খ) সাতো জমাতর লাগি উপদেশ ২-৩ রুকু
(গ) আল্লার পবিত্র তখতর দরশন ৪-৫ রুকু
(ঘ) গজবি সাতটা সীল-চাপ্পড় আর সাতটা শিংগা ৬-১১ রুকু
(ঙ) শয়তান দানবর লগে আল্লার খাছ বন্দার যুদ্ধ ১২:১-১৪:৫ আয়াত
(চ) আখেরি সাতটা গজব ১৪:৬-১৬:২১
(ছ) নাফরমান বাবিল টাউনর বিচার ১৭:১-১৯:১০
(জ) আখেরাতর বিচার ১৯:১১-২০:১৫
(ঝ) নয়া পয়দা ২১-২২ রুকু
সাহাবি হান্নানর বেহেস্তি দরশন (১:১-২০)
1
ছালাম আর দোয়া
অউ কিতাবো যততা লেখা অইছে, ইতা আল্লা পাকে ইছা আল-মসীরে জানাইছইন, আর আল-মসীয়ে ইতা জাইর করছইন। থুড়া দিনর ভিতরে যেতা যেতা বেয়াপার নিচ্চিত ঘটিবো, ইতা যাতে তান গুলাম অকলে জানইন। আল-মসীয়ে তান ফিরিস্তা পাঠাইয়া নিজর গুলাম সাহাবি হান্নানরে ইতা হকলতা জানাইলা। সাহাবি হান্নানে আল্লার কালাম আর ইছা আল-মসীর সাক্ষির বেয়াপারে যতো দরশন দেখলা, অউ দরশনর বেয়াপারেউ তাইন জবানবন্দি দিলা। আর হউ জনউ নেক-কপালি, যেইন ই কালামর আগাম খবর অকল তিলাওত করইন, আর তারাও নেক-কপালি, যেরা ই কালাম হুনইন, হুনিয়া হারি আমল করইন; কারন সময় তো ধারো আইচ্ছে।
4-5 তে আমি হান্নানে রোমান বাদশাইর আছিয়া দেশর সাতো জমাতর গেছে অউ জবানবন্দি লেখরাম। যেইন আছলা, যেইন আছইন আর যেইন হামেশা রইবা হউ আল্লা পাক, আর তান তখতর ছামনে যে সাত নমুনার রুহ থাকইন, এরা আর যেইন হক-হালাল সাক্ষি হউ ইছা আল-মসীয়ে তুমরারে রহমত আর শান্তি দান করউক্কা। তাইন তো মুর্দা অকলর মাজ থাকি পয়লা জিন্দা অইয়া উঠিছইন, তাইনউ দুনিয়ার রাজা অকলর বাদশা। তাইন আমরারে মহব্বত করইন, এরলাগি নিজর জান কুরবানি দিয়া, আমরারে গুনার সাজা থাকি বাচাইছইন। তাইন আমরারে লইয়া এক বাদশাই তিয়ার করিয়া, তান গাইবি বাফ আল্লার এবাদতির লাগি ইমাম বানাইছইন। তান মহিমা আর কুদরতি বল হর-হামেশা বওয়াল রউক। আমিন।
হুনো, তাইন মেঘর চাকাত অইয়া তশরিফ আনরা, পরতেকে তানরে চউখদি দেখবো, যারা লাকড়িদি বানাইল সলিবো গাথিয়া তানরে কাতল করছিল তারাও দেখবো, আর তান লাগি দুনিয়ার হকল জাতিয়ে জুরে জুরে কান্দিবা। অউলাউ অউক, আমিন। আল্লা মাবুদে বাতাইরা, “আমিউ আলিফ আর ইয়া, যেইন আছইন, যেইন আছলা আর যেইন হামেশা রইবা। আমিউ সর্ব-শক্তিমান।”
হজরত ইছার নুরর ছুরত
আমি তো তুমরার ভাই হান্নান, হজরত ইছার উম্মত অওয়ায় আমিও তুমরার লাখান একই কষ্ট, একই বাদশাই আর একই ছবরর ভাগি অইছি। আল্লার কালাম তবলিগ করায় আর ইছার পক্ষে জবানবন্দি দেওয়ায় আমারে পাতমুছ নামর দ্বীপো নিয়া বনবাস দেওয়া অইছিল। 10 এরমাজে হজরত ইছার পবিত্র দিন, এক রবিবারে আমি আল্লাই পাক রুহর মাজে পুরাপুর ডুবি গেলাম, অমন সময় আমার খরেদি শিংগার আওয়াজর লাখান এক আওয়াজ হুনলাম। 11 হুনলাম, কুনু এক জনে আমারে কইরা, “হুনো, তুমি অখন যেতা দেখরায়, ইতা এক কিতাবো লেখো, লেখিয়া ইফিছ, ইজমির, ফরগাম, থুয়াতিরা, ছার্দি, ফিলাদিলফিয়া আর লাওদিকেয়া টাউনর সাতো জমাতর গেছে পাঠাও।”
12 আমার লগে যেইন মাতিরা, তানরে দেখার খিয়ালে আমি খরেদি ঘুরলাম, ঘুরিয়া দেখি, সোনার সাতটা চেরাগ দানি। 13 অউ চেরাগ দানির মাজখানো ইবনে-আদমর লাখান একজনরে দেখলাম। তান ফিন্নো পাও পর্যন্ত লাম্বা পাইঞ্জাবি, আর বুকুর উপরে সোনালী এক পট্টি। 14 তান মাথার চুল দুধর লাখান ধলা চকচকা। তান চউখ আগুনির লুক্কার লাখান। 15 পাও অইলোগি, আগুইনদি জালাইয়া মাঞ্জিয়া পরিস্কার করা চকচকা পিতলর লাখান, আর তান গলার আওয়াজ অইলো, জুরে জুরে কল-কলাইয়া যাওয়া পানির ফুতর লাখান। 16 তান মুখর ছুরত আছিল পুরা জলমল কররা সুরুজর লাখান। তান মুখ থাকি ধারাইল এখান তলোয়ার বারইলো, ই তলোয়ারর দুইও গালাবায় ধার আছিল, আর তান ডাইন আতো আছিল আছমানর সাতটা তেরা।
17 তানে দেখিয়া আমি মরার লাখান তান পাওর কান্দাত পড়ি রইলাম। তেউ তান নিজর ডাইনর আত আমার উপরে থইয়া কইলা, “ডরাইও না। আমিউ আউয়াল আর আমিউ আখের, 18 আমিউ হাইউল-কাইয়ুম, যেইন নিজে নিজে হর-হামেশা আছি। আমার মউত অইছিল, অইলে অখন আমি যুগ যুগ ধরি চিরকাল জিন্দা আছি। মউত আর কয়বরর চাবি আমার আতো আছে। 19 এরলাগিউ তুমি অখন যেতা দেখরায়, এর আগে যেতা ঘটিছে আর বাদে যেতা ঘটিবো, ইতা হক্কলতা তুমি লেখিয়া থও। 20 তুমি সোনার যে সাতটা চেরাগ দানি দেখছো আর আমার ডাইন আতো সাতটা তেরা দেখছো, ইতার মানি অইলো, সাতো তেরা অইলো সাত জমাতর সাত জন ফিরিস্তা, সাতটা চেরাগ দানি অইলো হউ সাতো জমাত।